যুবশক্তির অন্তর্ভুক্তি ছাড়া টেকসই অগ্রগতি সম্ভব নয়: প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস

জাতীয়

ভোরের দূত ডেস্ক: বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন যে, যুবকদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া টেকসই বৈশ্বিক অগ্রগতি সম্ভব নয়। তিনি বেকারত্বকে টেকসই উন্নয়নের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে ‘যুবদের জন্য বিশ্ব কর্মসূচি’র ৩০তম বার্ষিকী উপলক্ষে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সাইডলাইনে আয়োজিত এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকের আলোচ্য বিষয় ছিল—’অন্তঃপ্রজন্মীয় সহযোগিতার মাধ্যমে বৈশ্বিক অগ্রগতি ত্বরান্বিত করা’।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “পঁচাশি বছর বয়সে এসে আজকের আলোচ্য বিষয়ের গভীরতা আমি অনুভব করছি। গত বছর বাংলাদেশে আমরা যুবশক্তির অসাধারণ ক্ষমতা দেখেছি। তারা সাহসের সঙ্গে বহু বছরের স্বৈরশাসনের অবসান ঘটিয়েছে, আমাদের জাতির পথ পুনঃনির্ধারণ করেছে এবং আমাকে সংস্কার ও গণতান্ত্রিক রূপান্তরের দায়িত্ব দিয়েছে।”

তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, যুবকরা বিশ্বে পরিবর্তনের এজেন্ট। তবে তারা প্রথমেই বৈষম্য, সংঘাত, জলবায়ু পরিবর্তন এবং ডিজিটাল বিভাজনের মতো নেতিবাচক প্রভাবের শিকার হন। তাঁর মতে, সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো বেকারত্ব, যা নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় চারগুণ বেশি।

এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের উদ্যোগ তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশে আমরা একটি জাতীয় যুব উদ্যোক্তা নীতি চালু করেছি, যা অর্থ, দক্ষতা ও বাজার প্রবেশ নিশ্চিত করে। এর ফলে যুবরা চাকরি প্রার্থী নয়, চাকরি সৃষ্টিকারী হয়ে উঠবে।” তিনি আরও জানান, স্বাধীন সংস্কার কমিশনগুলোতে যুব অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়েছে এবং গণতান্ত্রিক নবায়নে যুবদের কণ্ঠস্বর অন্তর্ভুক্ত করতে একটি জাতীয় নীতি প্রতিযোগিতা চালু করা হয়েছে।

অধ্যাপক ইউনূস সতর্ক করে বলেন, কোনো দেশ একা যুবশক্তিকে ক্ষমতায়িত করতে পারে না। তিনি বাধা দূর করতে, ন্যায় নিশ্চিত করতে এবং অন্তঃপ্রজন্মীয় নেতৃত্বকে উৎসাহিত করতে বৈশ্বিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, “নয়তো হতাশা অশান্তিতে রূপ নিতে পারে, যা দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে।”

সবশেষে তিনি বলেন, “মূল কথা খুব সহজ—আমাদের ভবিষ্যৎ একা বহন করলে হবে না। আমাদের শুধু যুবদের তাদের অধিকার, নিরাপদ স্থান ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ দিতে হবে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, তারা নিজেদের জন্য, পৃথিবীর জন্য এবং আমাদের ভবিষ্যতের জন্য সঠিকভাবে নির্বাচন করবে।”

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *