দেলোয়ার হোসাইন মাহদী (ব্রাহ্মণবাড়িয়া):
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জাল দলিল তৈরি করে সরকারি নথিতে নামজারি করিয়ে জায়গা দখল ও অনুমতি ছাড়া রেস্টুরেন্ট চালুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত স্থাপনা সিলগালার দাবি জানিয়ে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) ও জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন কুমারশীল মোড়ের বাসিন্দা মো. আবুল কালাম আজাদ।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, গত ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) শুনানির পর পুলিশ কর্মকর্তা মো. তৌহিদুজ্জামান কর্তৃক জাল দলিলের ভিত্তিতে করা নামজারি বাতিল ঘোষণা করেন। সাব–রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের সহযোগিতায় জালিয়াতির বিষয়টি প্রমাণিত হয়।
তবুও নামজারি বাতিল হওয়ার পর তৌহিদুজ্জামান “মাস্টার ক্যাফে” নামে একটি রেস্টুরেন্ট চালু করেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, জেলা প্রশাসক থেকে হোটেল–রেস্তোরাঁ নিবন্ধন, পৌরসভার ট্রেড লাইসেন্স, ফায়ার সেফটি সার্টিফিকেট কিংবা পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র ছাড়াই তিনি ব্যবসা শুরু করেছেন। ফলে ২৫০ শয্যা হাসপাতালের সামনে গড়ে ওঠা এ অবৈধ স্থাপনা দ্রুত মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সিলগালা করার দাবি তুলেছেন আবুল কালাম আজাদ।
অভিযুক্ত কর্মকর্তা তৌহিদুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, “এই জায়গাটি আমার বাবা হেবা দলিল করে দিয়েছেন। বাতিল হওয়া দলিলটি নকলভাবে তৈরি করে আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। এ নিয়ে আদালতে দুটি মামলা চলমান আছে।”
তবে তদন্তে দেখা যায়, তার পিতা ছিদ্দিকুর রহমান ১৯ সেপ্টেম্বর ১৯৯৫ সালে জায়গাটি আবুল কালাম আজাদের মায়ের নামে রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন। এসিল্যান্ড অফিসের নামজারী দলিলেও বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। পরবর্তীতে পূর্বের বিক্রি করা দলিল বাতিলের জন্য ছিদ্দিকুর রহমান আদালতে মামলা (নম্বর-১৯/২৫, তারিখ-১২/১/২০২৫) করলেও আদালতের রায় পাওয়ার আগেই ১৫ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে নতুন দলিল (নং-৭৪৫) তৈরি করেন, যা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে নিশ্চিত হয়েছে।
তৌহিদুজ্জামান এর দলিল জালিয়াতির প্রমাণ প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে। আইনে একই জায়গা একাধিকবার বিক্রি করা ফৌজদারি অপরাধ বলে উল্লেখ আছে। পুলিশ কর্মকর্তা হয়ে এ ধরনের প্রতারণা শহরে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।