সাইবার সুরক্ষায় ৭ দফা প্রস্তাবনা তুলে ধরলেন রাকসুর নারী প্রার্থীরা

সারাদেশ ক্যাম্পাস

রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী নারী প্রার্থীরা ক্যাম্পাস ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তুলতে ৭ দফা প্রস্তাব পেশ করেছেন। শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব দাবি জানান।

তাদের প্রস্তাবনায় উল্লেখ করা হয়েছে: বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ সাইবার সুরক্ষা নীতি প্রণয়ন করতে হবে, যাতে অনলাইন আচরণবিধি, তথ্য যাচাই প্রক্রিয়া, শাস্তিমূলক ধারা ও বিশেষভাবে নারী শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা নিশ্চিতকরণের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।এ ছাড়া ক্যাম্পাসজুড়ে পর্যাপ্ত আলো ও সিসিটিভির ব্যবস্থা করা এবং নিরাপত্তা টহল জোরদার করার পাশাপাশি নারী-পুরুষ নির্বিশেষে শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরির দাবি জানানো হয়। তারা একটি ২৪ ঘণ্টা কার্যকর বিশেষ সেল গঠনেরও প্রস্তাব করেন, যেখানে নারী শিক্ষার্থী, শিক্ষক, আইটি বিশেষজ্ঞ ও মনোবিজ্ঞানীরা যৌথভাবে অনলাইন হয়রানি ও সাইবার অপরাধের অভিযোগ তদন্ত করবেন। অভিযোগকারীর পরিচয় সুরক্ষিত রাখার বিষয়েও তারা জোর দেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়-সম্পর্কিত সকল অফিসিয়াল গ্রুপ বা পেজে সদস্য হতে হলে আইডি কার্ড বা প্রাসঙ্গিক ডকুমেন্ট যাচাই বাধ্যতামূলক করতে হবে। ফেক ও বট আইডি শনাক্তে নিয়মিত মনিটরিং এবং গ্রুপ অ্যাডমিনদের জন্য যাচাই-বাছাইয়ের সুস্পষ্ট প্রটোকল নির্ধারণ করার প্রস্তাব রাখা হয়।

নারী শিক্ষার্থীদের ছবি, ভিডিও বা ব্যক্তিগত তথ্য অনুমতি ছাড়া প্রকাশ বা বিকৃত করার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি তোলেন তারা। তবে একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের ওপর কোনো ধরনের গণনজরদারি বা মনিটরিং সফটওয়্যার ব্যবহার না করার বিষয়েও এ প্রস্তাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়।
ডিজিটাল সাক্ষরতা বাড়াতে শিক্ষার্থীদের জন্য সাইবার নিরাপত্তা, তথ্য যাচাই ও হয়রানি প্রতিরোধ বিষয়ক কর্মশালা আয়োজন এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য স্বল্পমেয়াদি প্রশিক্ষণ চালুর কথাও প্রার্থীরা তুলে ধরেন। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগ, হল এবং প্রশাসনিক ইউনিটের জন্য ভেরিফায়েড সোশ্যাল মিডিয়া চ্যানেল খোলার সুপারিশ করেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে ভিপি প্রার্থী তাসিন খান বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোতে বিভ্রান্তিকর তথ্য, গুজব, চরিত্রহনন ও ব্যক্তিগত আক্রমণ ক্রমশ বেড়ে চলেছে। নারী শিক্ষার্থীদের ছবি ও ব্যক্তিগত তথ্য অনুমতি ছাড়া ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, যা আমাদের নিরাপত্তাহীনতায় ফেলছে।”
তিনি অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে একাধিকবার অভিযোগ দেওয়া হলেও কোনো প্রতিকার মেলেনি। বরং শিক্ষার্থীদের ফোন নম্বরসহ ভোটার তালিকা প্রকাশের মতো পদক্ষেপ পরিস্থিতিকে আরও অনিরাপদ করে তুলেছে।
তাসিন খান আরও যোগ করেন, “প্রশাসন নির্বিকার থাকায় এবং কোনো কার্যকর সাইবার নীতিমালা না থাকায় দিন দিন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। আমরা চাই, অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *